চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতার অভাব নেই। আজকাল পছন্দসই একটা চাকরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ। সেই সোনার হরিণটাকে ধরতে অনেকেরই নাজেহাল অবস্থা। তাই আজ আমরা কথা বলবো চাকরি কিংবা ক্যারিয়ার সম্পর্কে। ক্যারিয়ার সম্পর্কে কিছু গাইডলাইন এবং চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকা গুলো সম্পর্কে আজ আমরা জানবো।
লেখার সূচিপত্র
চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকার পিডিএফ
পিডিএফ আকারে প্রতি সপ্তাহের চাকরির খবর পত্রিকার পিডিএফ শেয়ার করা হবে। পিডিএফ আকারে পাওয়ার জন্য পোস্টের শেষের অংশে দেখুন।
ক্যারিয়ার গাইডলাইন
স্কুলে প্রায় ১০ বছর, কলেজে ২ বছর, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ৫ – ৬ বছর পড়ালেখা করার পর আমাদের অনেকেই কর্মজীবনে গিয়ে চাকরি পেতে হিমশিম খাই, নানা ধরনের বিড়ম্বনায় পড়ি। দীর্ঘ শিক্ষা জীবন পাড়ি দিয়ে এমন সমস্যায় পড়া সত্যিই খুব দূঃখজনক।
অনেক বাবা- মা জীবনের সবটুকু সম্বল দিয়ে সন্তানকে পড়ালেখা করান। শিক্ষা জীবন শেষে সেই সন্তান যখন উপযুক্ত ভালো একটি চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না, তখন সেই পরিবারের অবস্থাটা সত্যিই বর্ণনা করার মতো নয়। সেই সন্তানও হতাশার সাগরে তলিয়ে যায়, পরিবারও দারুণ কষ্টে আপতিত হয়।
চাকরির না পাওয়ার কারণ
এমন অবস্থাকে মোটা দাগে দুটো কারণে ভাগ করা যায়। প্রথমত, আমাদের সিস্টেমের দোষ, অফিস- আদালতে দুর্নীতি, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, স্বজনপ্রিয়তা ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, চাকরি প্রার্থীর উপযুক্ত যোগ্যতার অভাব।
দারিদ্র্যের যেমন দুষ্ট চক্র রয়েছে, ঠিক তেমনি আমার মতে চাকরি অপ্রাপ্তিরও একটা দুষ্ট চক্র আছে। বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রিয়তা ইত্যাদি কারণেই যোগ্য প্রার্থীরা যোগ্য পদে বসতে পারে না। আবার, যোগ্য পদে যোগ্য প্রার্থী নেই বলেই এসব অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রিয়তা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। এ যেন এক মহা দুষ্ট চক্র। ছন্ন ছাড়া, বেয়াড়া এক ব্যবস্থা!!
তবে বর্তমানে পরিস্থিতি দ্রুতই বদলে যাচ্ছে। এই সময়ে এসে সঠিক যোগ্যতা থাকলে, একজন প্রার্থী কোনো না কোনো ভালো জায়গায় অবশ্যই পৌঁছাতে পারবেন। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রায় ১৭ – ১৮ বছর শিক্ষা জীবন পার করার পরও আমাদের দেশের তরুণরা সঠিক বা কাঙিক্ষত যোগ্যতা নিয়ে বের হতে পারে না।
এর অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে- শুধুমাত্র পরীক্ষার নম্বরভিত্তিক পড়ালেখা। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী কেবলমাত্র পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার জন্যই পড়ালেখা করে। অভিভাবক কিংবা শিক্ষকগণও কেবলমাত্র ভালো নম্বর পাওয়াটাকেই যোগ্যতার মাপকাঠি মনে করেন। শিক্ষার্থী আসলেই জ্ঞান অর্জন করলো কি করলো না, নিজ যোগ্যতায় পরীক্ষায় ভালো করেছে নাকি অসদুপায় অবলম্বন করেছে- এসব বিষয়ে বেশিরভাগ অভিভাবক, শিক্ষক এমনকি সমাজও সাধারণত চিন্তা করেন না।
ফলশ্রুতিতে শুধুমাত্র মুখস্ত নির্ভর কিংবা পরীক্ষাকেন্দ্রিক পড়াশোনা করার কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সঠিক বা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা নিয়ে বের হতে পারছে না। যেমন- পরীক্ষায় যদি প্রশ্ন করা হয়: ঘাস কাটার যন্ত্র কাহাকে বলে? পরীক্ষার্থী উত্তর লিখে দিলো: যাহা দিয়ে ঘাস কাটা হয়, তাহাই ঘাস কাটার যন্ত্র। শিক্ষক মশাইও নম্বর দিলেন, অভিভাবকও খুশি, সমাজও খুশি, সবাই খুশি। কিন্তু, শিক্ষার্থী আসলেই কি জানে, ঘাস কাটার যন্ত্র কোনটা?
এরকম আরো শত শিক্ষার্থী যখন চাকরির বাজারে যায়, তখন তারা ঘাস ঘাটার যন্ত্রও চিনতে পারে না, চাকরি নাম সোনার হরিণটিরও আর দেখা মেলে না। এভাবেই অনুধাবনবিহীন মুখস্ত নির্ভর পড়ালেখা কিংবা সিলেবাস, কেবলমাত্র পরীক্ষা কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা কিংবা কার্যকরী পরিকল্পনার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাশ করে বের হওয়া শিক্ষার্থীও চাকরির বাজারে হয়তো বড় অসহায়।
চাকরি পাওয়ার জন্য করণীয়
এ তো গেলো চাকরি না পাওয়ার কারণ। এখন চাকরি না পাওয়া মানুষদের করণীয়টা- ই বা কী? একজন মানুষ তার যোগ্যতা দিয়ে উপযুক্ত চাকরি পেয়ে গেলে তো ভালোই। কিন্তু, শিক্ষা জীবন শেষ করার পর চাকরি না পেলে সবার আগেই যেটা করতে হবে, সেটা হলো দক্ষতা অর্জন।
আপনি যে দক্ষতাটার অভাবে চাকরি পাচ্ছেন না, সেটায় জোর দিন। আপনার হয়তো ভালো কম্পিউটার দক্ষতা নেই। কিংবা ইংরেজিতে হয়তো কিছু দুর্বলতা আছে। অথবা অন্য বিষয়েও দুর্বলতা থাকতে পারে। সর্বপ্রথম এই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠুন। এগুলো কাটানোর জন্য আপনাকে পুরো শিক্ষাজীবন আবার চষে ফেলতে হবে না। কয়েক মাস সময় দিয়েই আপনি ঘাটতি থাকা দক্ষতাগুলো পূরণ করে নিতে পারবেন।
তবে তার জন্য সঠিক ও কার্যকরী পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা ইত্যাদি অবশ্যই প্রয়োজন। এখানে অনেকের একটা ভুল ধারণা কাজ করে। অনেকেই মনে করেন, আগে চাকরিটা হয়ে যাক। তারপর দক্ষতাগুলো অর্জন করা যাবে। কিন্তু, চাকরির পরও তাঁরা আর সেই দক্ষতা অর্জনের সময় পান না। আবার, দক্ষতা না থাকায় ভালো চাকরিও পান না।
অর্থাৎ, চাকরি নাম সোনার হরিণটির নাগাল যদি আপনি সহজে না পান, তবে আগে নিজের ঘাটতিগুলো বের করুন, সেগুলো পূরণ করার পিছনে সময় দিন। দুয়েক মাস কোনো চাকরি- বাকরি না খুঁজে কেবলই আপনার ঘাটতিগুলো পূরণের পেছনে সময় দিন। তারপর চাকরির জন্য আবেদন শুরু করুন। আশা করি, ভালো ফল পাবেন।
এখানে আরও একটা বিষয় বলে রাখা ভালো। স্বভাবজাতই আমাদের সবার মাঝেই কোনো না কোনো বিশেষ দক্ষতা আছে। শখ হিসেবেই হোক কিংবা অন্য কোনো ভাবে, আমাদের সবার মাঝেই সৃষ্টিকর্তা কোনো না কোনো বিশেষ দক্ষতা দিয়েছেন। সেটাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন, সেই দক্ষতাটার গোড়ায় পানি ঢালুন। সেই দক্ষতাই হয়তো আপনাকে চাকরির বাজারে ইউনিক করে তুলবে।
চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকা
এতক্ষণ চাকরি না পাওয়ার কারণ এবং চাকরি পেতে হলে করণীয় সম্পর্কে কিছু কথাবার্তা বলেছি। তবে চাকরি পেতে হলে চাকরির তথ্যটাও জানা জরুরি। তাই চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলো নিয়েও আপনাদের সাথে কথা বলবো।
আগেই বলেছি, দক্ষতার ঘাটতি থাকলে সেগুলো পূরণ করার আগে চাকরি খোঁজা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে না। তাই দক্ষতার ঘাটতি থাকলে, আগে সেগুলো পূরণ করে নিন। যদি ইতোমধ্যে দক্ষতা সঠিকভাবে অর্জন করে ফেলেন, তবে চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলো আপনার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে।
এই চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোতে আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, অফিসে, বড় বড় কোম্পানিতে চাকরির খবরগুলো সহজেই পেয়ে যাবেন। আপনার যোগ্যতা, প্রয়োজন, আকাঙক্ষা ইত্যাদি বিবেচনায় কোন চাকরির খবরগুলো আপনার জন্য উপযুক্ত, তা আপনি সহজেই নির্ণয় করতে পারবেন।
তাহলে চলূন, চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর একটি তালিকা জেনে নিই। সেই সাথে চাকরির খবর পাওয়া যায়, এমন কিছু সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ, মোবাইল অ্যাপস, বড় ওয়েবসাইট আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর তালিকা
চাকরির ডাক
চাকরির ডাক চাকরির খবর বিষয়ক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। এটি প্রতি সপ্তাহে শুক্রবারে প্রকাশ করা হয়। এই পত্রিকাটি ৪ টি পৃষ্ঠায় প্রকাশ করা হয়ে থাকে। চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাটির দাম মাত্র ৫ টাকা।
চাকরির ডাক- চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় জব নিউজ পেপার। এতে সারা দেশের বিভিন্ন ধরনের চাকরির খবর নিয়মিত প্রকাশ হয়। এ ধরনের চাকরি সম্পর্কিত পত্রিকাগুলোর একটা বড় সুবিধা হলো- এখানে বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন শ্রেণির, বিভিন্ন মানের এমনকি বিভিন্ন বেতনের চাকরি সংবাদ পাওয়া যায়।
কেউ অফিস সহকারীর কাজ করতে চাইলে তিনি সেটা সম্পর্কেও বিভিন্ন চাকরির খবর পেতে পারেন। কেউ গাড়ি চালাতে চাইলে সেটা নিয়েও বিভিন্ন ধরনের চাকরি খুঁজে পেতে পারেন। কেউ মিডল ক্লাস বা হাই ক্লাস চাকরি খুঁজলে সেটাও তিনি খুঁজে পাবেন এ ধরনের চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোতে।
অর্থাৎ, আপনি যেই লেভেলের মানুষই হউন না কেন, যে ধরনেই চাকরিই খুঁজেন না কেন, এ ধরনের পত্রিকায় সহজে সেগুলো পেয়ে যেতে পারেন।
চাকরির খবর
এটিও আমাদের দেশের চাকরির খবর বিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকা। ৪ টি পৃষ্ঠায় এ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এটিরও দাম মাত্র ৫ টাকা। বাংলাদেশে এ পত্রিকার পাঠক সংখ্যা অনেক এবং দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
এই চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাতেও আপনি বিভিন্ন ধরনের এবং মানের চাকরি খুঁজে পাবেন। এই পত্রিকাটি এর গ্রাহকদের একটি বিশেষ সুবিধা দেয়। গ্রাহকরা চাইলে ঘরে বসেই এ পত্রিকাটি সংগ্রহ করতে পারবেন। ত্রৈ মাসিক, ষান্মাসিক ও বাৎসরিক- মোট এই ৩ টি প্ল্যানে চাকরিটি ডাক যোগে সংগ্রহ করা যায়। ত্রৈমাসিক প্ল্যানের মূল্য ৬০ টাকা, ষান্মাসিক প্ল্যানের মূল্য ১২০ টাকা এবং বাৎসরিক প্ল্যানের মূল্য ২৪০ টাকা।
চাকরির সংবাদ
এটিও দেশের জনপ্রিয় একটি চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকা। সরকারি, বেসরকারি, শিক্ষা বিষয়ক, স্বাস্থ্য বিষয়ক, বিভিন্ন মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি সহ নানা ধরনের চাকরি সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয় এই পত্রিকায়। দেশের বেকার যুবকদের কাছে এই পত্রিকাটিও খুব জনপ্রিয়।
প্রথম আলো- চাকরি বাকরি
প্রথম আলো নিঃসন্দেহে শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং সারা বিশ্বেই ভালো মানের পত্রিকাগুলোর একটি। এটির রয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এই পত্রিকাতেই ‘চাকরি-বাকরি’ নামক একটা পাতা প্রায়ই প্রকাশ করা হয়। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবারে প্রথম আলো পত্রিকায় এই চাকরি-বাকরি পাতা প্রকাশিত হয়। শুক্রবারে প্রথম আলো মূল পত্রিকা কিনলেই এ চাকরির পাতাটি গ্রাহক পেয়ে যায়।
প্রথম আলোর গ্রাহক সংখ্যা হাজার নয়, লাখ নয়, কোটির ঘরে। তাই এর চাকরি-বাকরি পাতার গ্রাহক সংখ্যাও অন্য অনেক চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকায় তুলনায় প্রতিযোগিতায় অনেক এগিয়ে থাকবে এবং এটাই স্বাভাবিক। যেহেতু প্রথম আলো নিজেই যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য এবং নামকরা পত্রিকা, তাই এর চাকরি-বাকরি পাতায়ও সাধারণত নির্ভরযোগ্য জন নিউজই বেশি থাকে।
দেশের সরকারি, বেসরকারি, বহুজাতির কোম্পানি এমনকি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাকরির খবরও এ পত্রিকায় পেতে পারেন।
চাকরির খবর: বিভিন্ন ওয়েবসাইট
বিভিন্ন ওয়েবসাইটে চাকরির খবর, সার্কুলারের ছবি ইত্যাদি প্রকাশ করা হয়। ওয়েব সাইটগুলোতে নিয়মিত ভিজিট করলেও আপনি পেয়ে যেতে পারেন আপনার পছন্দের চাকরি। চলুন জেনে নেয়া যাক চাকরির খবর সম্পর্কিত জনপ্রিয় কয়েকটি ওয়েবসাইটের নাম।
বিডিজবস
জব নিউজ নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন প্ল্যাটফরমগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো বিডিজবস। এখানে আপনি খুব সহজে আপনার পছন্দসই চাকরি খুঁজে নিতে পারেন। এখানে আপনি আপনার পছন্দমতো ক্যাটাগরি, কীওয়ার্ড, লোকেশান এবং আরও হরেক কম অপশন ব্যবহার করে সহজেই কাঙ্ক্ষিত চাকরিটি খুঁজে পেতে পারেন।
হাজারো- লাখো চাকরির মাঝে আপনার পছন্দ মতো চাকরির খবর খুঁজে নেয়া খুবই কঠিন। অনেকেই বোকার মতো, চিন্তা- ভাবনা ছাড়াই সব চাকরির সংবাদ পড়তে শুরু করেন। আবার, যাঁরা একটু বেছে বেছে পড়েন, তাঁরাও হাজারো চাকরির মাঝে উপযুক্ত অপশনগুলো খুঁজে নিতে হিমশিম খান। বিডিজবস এসব দিক থেকে ব্যবহারকারীদের চমৎকার সুবিধা দিয়ে থাকে।
বিজিজবস এ বিভিন্ন অপশনের ভিত্তিতে রয়েছে কাস্টমাইজেশনের সুবিধা। যা হয়তো আপনার সময় অনেকটুকুই সাশ্রয় করতে সহায়তা করবে। তাছাড়া এই প্ল্যাটফরমটিতে সরাসরি চাকরির আবেদন করা যায়। বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি চাকরির আবেদন গ্রহণ করার জন্যও বিডিজবস ব্যবহার করে।
জবস্কিল
জবস্কিল বাংলাদেশে চাকরির খবর সংক্রান্ত জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলোর একটি। সরকারি, বেসরকারি, শিক্ষা বিষয়ক, স্বাস্থ্য বিষয়ক চাকরি এমনকি বিভিন্ন বহু জাতিক বড় বড় কোম্পানি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলোতেও লোক নিয়োগ করা হলে, এই ওয়েবসাইটটি প্রায়ই সেসব চাকরির খবর প্রকাশ করে। এখানে আপনি সার্চ করেও পছন্দ মতো বিভিন্ন চাকরি খুঁজে পেতে পারেন।
এই ওয়েব সাইট টিতে ‘ক্যারিয়ার টিপস’ নামক একটি সেকশন রয়েছে। ক্যারিয়ার গাইড লাইন, বিভিন্ন কোম্পানির চাকরির ইন্টারভিউতে প্রয়োগ করার মতো নানা কৌশল ইত্যাদি সম্পর্কে সুন্দর সুন্দর নির্দেশনা ও আর্টিকেল প্রকাশ করা এই সেকশনের কাজ। আপনিও আপনার প্রয়োজনমতো টিপস এখানে পেতে পারেন।
টেলিটক জব পোর্টাল
টেলিটক বাংলাদেশি একটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি। সাধারণত বিভিন্ন সরকারি ও আধা- সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে আবেদন ফি গ্রহণ করা হয় টেলিটক ব্যবহার করে। সেই সূত্রে কিছু দিন আগে টেলিটক একটি জব পোর্টাল চালু করে।
এই পোর্টালটির বিশেষত্ব হলো- এটিতে ঢুকলেই লাইভ কয়টি চাকরির ভ্যাকেন্সি আছে, কোথায় কোন চাকরি এগুলো সুন্দর করে সামারি বা ওভারভিউ হিসেবে এক নজরে দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়। এখানেও বিভিন্ন ক্যাটাগরি ও আরও অনেক অপশন ব্যবহার করে কাস্টমাইজ করে চাকরির সংবাদ খুঁজে নেয়া যায়।
চাকরির খবর: ফেসবুক
আপনি ফেসবুকেও চাকরির খবর নিয়ে অনেকগুলো গ্রুপ খুঁজে পাবেন। এখানেও নিয়মিত চাকরি খবর পেতে পারেন। চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর ছবিও অনেক সময় ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়। সেগুলোও আপনার কাজে লাগতে পারে।
তবে যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং আমাদের দেশে হুজুগে লোকজনের সংখ্যা নেহাত কম নয়, তাই ফেসবুকে চাকরির খবর পেলে সেটাকে নিজ দায়িত্বে যাচাই করে নিবেন। কারণ, ফেসবুকে প্রকাশিত খবর সঠিক না- ও হতে পারে।
Chakrir Khobor – চাকরির খবর, Government, Non-Government Job News Group
এটি একটি জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ। এই গ্রুপটিতে চাকরি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ও সার্কুলার প্রকাশ করা হয়। এই ফেসবুক গ্রুপটিতে প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার সদস্য রয়েছেন।
আপনিও আপনার পছন্দমতো কোনো চাকরি হয়তো পেয়ে যেতে পারেন এখান থেকে। তবে, যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া, তাই নির্ভরযোগ্যতা নিজ দায়িত্বে নিশ্চিত হতে হবে।
Job Circular BD / সকল চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
এটিও জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ। এতে প্রায় এক লক্ষ সদস্য রয়েছেন। এখানেও বাংলাদেশের বিভিন্ন চাকরির খবর প্রকাশ করা হয়। এই গ্রুপটিতে যোগ দিলে চাকরি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য আপনার নিউজ ফিডেই দেখতে পাবেন।
প্রতিদিনের চাকরির খবর (Daily Jobs News)
চাকরির খবর সংক্রান্ত এই ফেসবুক গ্রুপটি তে সদস্য আছে প্রায় ৭৪ হাজার। এখানেও বিভিন্ন চাকরির খবর প্রকাশ করা হয়। এটিতেও আপনি যুক্ত হতে পারেন।
Daily Jobs Update – প্রতিদিনের চাকরির খবর
এটিও বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় জব নিউজ গ্রুপ। প্রায় অর্ধ লক্ষের ও বেশি সদস্য রয়েছে এই ফেসবুক গ্রুপে। এটিতে যোগদান করলে আপনি সরকারি, বেসরকারি সহ নানা ধরনের চাকরির খবর সহজেই পেতে পারেন।
প্রতারণা হতে সাবধান!!
যখনই চাকরির সংবাদ প্রকাশ করা হয়, তখনই প্রতারকরা তার সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করে। চাকরির আবেদন করার সময় ফি প্রদান করতে হয়। আর হন্যে হয়ে চাকরি নামক সোনার হরিণ খোঁজা এক জন বেকার যুবক যে কোনো ফি প্রদানের বিনিময়ে হলেও একটি চাকরি পেতে চায়। বেকারদের লোভ দেখিয়ে সেই সুযোগটিই গ্রহণ করার চেষ্টা করি প্রতারক ও দালাল চক্র।
তাই যখনই কোনো চাকরির আবেদন করবেন, তখন সেই চাকরি দাতা কোম্পানির নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত হবেন এবং চাকরির সংবাদটি সঠিক কিনা সেটিও কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিকট থেকে নিশ্চিত হয়ে নিবেন। অনলাইনে কোম্পানিটি সম্পর্কে রিসার্চ করতে পারেন। পরিচিতজন দের কাছে খোঁজ- খবর নিতে পারেন। বেশ সন্দেহজনক মনে হলে আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করে সেই চাকরির আবেদন থেকে সরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সর্বোপরি, লোভে পা দেওয়া যাবে না। প্রতারকরা সাধারণত লোভ দেখিয়েই টাকা আদায় করে এবং পালিয়ে যায়। আপনি যখন লোভ সংবরণ করে বাস্তবতা অনুধাবন করতে পারবেন, তখনই কেবল এসব প্রতারণা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।
শেষ কথা
আজকের এ আর্টিকেলে ক্যারিয়ার সম্পর্কে আপনাদের কিছু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। সেই সাথে বেশ কিছু চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকার তালিকা, চাকরির ওয়েবসাইট ও ফেসবুক গ্রুপের কথা বলেছি। আশা করি, এই তথ্যগুলো আপনার জীবনকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এগুলো আপনার সামান্য কাজে লাগলেও আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে বলে মনে করি।
‘ক্যারিয়ার গাইড এবং চাকরির খবর সাপ্তাহিক পত্রিকা’ শিরোনামে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। কমেন্টে আপনার মতামত বা পরামর্শ জানাতে ভুলবেন না। আবার কথা হবে পরের কোনো আর্টিকেলে। আজ এ পর্যন্তই।
ইন্টারনেট ও টেকনোলজি সম্পর্কে আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়ুনঃ
গুগল মামার অফিস অ্যাপ্লিকেশন রিভিউ-2021
এই ব্লগের লেখার কুয়ালিটি অনেক সুন্দর।লেখা গুলো পড়তেও ভালো লাগে।চালিয়ে যান ভাই।